-তুমি কিন্তু পরিসংখ্যানের গণিতে একবার প্যাঁচাল খেয়ে গিয়েছিলে।
--হতে পারে। মনে নেই।
-আমার মনে আছে। তোমার বেগতিক চেহারাটা আমায় সেদিন পৈশাচিক আনন্দ দিয়েছিলো।
--বলো কী? আমার সত্যিই মনে নেই। এতো গুরুতর আমায় কোথায় সান্ত্বনা দেবে তা না তুমি মজা নিয়েছিলে। পাষাণ একটা।
--তো কী? আমার আগুন চোখের শিখা তোমায় জ্বালাতে পারলোনা। ওই ক্রমযোজিত গণসংখ্যায় তোমার যত মনোযোগ।
-ভালোবাসতে?
--কই নাতো। অতশত বুঝতাম নাকি?
রুটিনের পর রুটিন করে পড়তে চাওয়ার মতো আমিতো ছিলাম না। দ্যানজ্ঞান, সিলেবাস কিংবা রুটিন আমার সবইতো তুমিই ছিলে। আমার পুরানো মলাটের পাতায় পাতায় তোমার নাম পাওয়া গেলে বুঝি ভালোবাসতাম ভেবে নিতে?
-আরেহ না। আমার ভালোবাসা ছিলো তোমার পেতে দেয়া হাতে। মারের জন্য ভীত হয়ে কোনদিন অসহায়ও মনে হয়নি তোমায়। আমি দারুণ উচ্ছাসে মার দিতাম। কতটা ভালোবাসলে একটা মানুষ প্রতিদিন তিক্ত ভালোবাসা নিতে এরকম হাত পেতে দিতো। একটা বিষয়ে বারংবার ইচ্ছাকৃত ব্যর্থ হতো। আমি প্রতিটি বিষয়ে তোমার নম্বর দেখতাম। গণিতে এতো কম নম্বর পাওয়ার মতো তুমি কোনদিনই ছিলেনা।
--হ্যাঁ। তোমার জন্য ছিলাম শুধু। শুধুই তোমার জন্য। কত প্রেমের চিঠির প্রত্যাখ্যান করেছিলাম।
মনে আছে সজলের কথা?
-কোন সজল? তোমাদের শ্রেণিতে যে সবসময় প্রথম হতো?
--জ্বী জ্বী। এতো সহজে মনে পড়ে গেলো!
-আহা! ছেলেটা। হুট করে বিদেশ চলে গিয়েছিলো।
--জ্বী না। সজল দেশেই ছিলো। আমার প্রেমের প্রত্যাখ্যানে কষ্ট পেয়ে সে তখনই ঢাকায় চলে আসে। এতোটা কষ্ট পাবে ভাবিনি। পরে আমার মন খারাপ হয়েছিলো ওর জন্য। তাতে কী? তুমিই আমার সব ছিলে। সবাই জানতো, আমি তোমার জন্য পাগল ছিলাম।
-আমিও জানতাম কিন্তু মানতাম না।
--কেন কেন?
-শিক্ষক-ছাত্রীতে প্রেম হয়না।
--সংসার হয়?
-দিব্যি হচ্ছে তো। প্রায় নয় বছর না?
--বাবা যখন বলেছিলো, 'তোর জন্য একটা বিয়ের প্রস্তাব আছে।'
আমি না পারি মরে যাই। যখন সে প্রস্তাবের শেষে তুমি এলে আমি এবার খুশিতে মরে যায়। তোমার কারণে মরতে চাওয়াতেও অদ্ভুত প্রেম আছে।
-সেটা নিতান্তই তোমার গুণ। তুমি একজন পরিপূর্ণ প্রেমিকা।
--কেন আমায় খুঁজে নিয়েছিলে?
-ভালোবাসতাম বলে।
--এতোবছর পরেও পারলে?
-পারলাম তো। ভালোবাসা সময় সাপেক্ষ না, দূরত্ব সাপেক্ষ ও না। ভালোবাসার কোন সংজ্ঞা নাই। ভালোবাসায় দ্বৈততা আর একনিষ্ঠতা থাকলেই চলে।
তুমি স্কুল শেষ করে চলে গেলে। আমার কেমন জানি শুণ্যতা অনুভূত হতে লাগলো। নিজেকে হাজার হারিয়ে তোমাতেই খুঁজে পেতাম। বুঝতে বাকি ছিলোনা আমি কেবল শিক্ষক নয় একজন প্রেমিক।
--আমি যদি হারিয়ে যেতাম?
-ভালোবাসা হারায় না, তুমিও হারাতে না।
আমিও হারাতে দিতাম বলে মনে হয়না।
--অনুসরণ করতে?
-সবসময়। সজলের সাথে ফের দেখার পরেও তোমার প্রেমে নতুন হাওয়া না লাগাটা আমাকে ভালোবাসতে বেগবান করেছিলো। তুমি এক অদ্ভুত প্রেমিকা আমার।
-এতো ভালোবাসো?
-ছয় বছরের অপেক্ষা আর নিষ্প্রাণতা বয়ে চলা আর একবার প্রত্যাবর্তনের অপেক্ষায় যুগযুগ কাটিয়ে দেয়ার পণ করেছিলাম জানলে বুঝি ভালোবাসতাম ভেবে নিতে?
--আরেহ না। আমার ভালোবাসা ছিলো তোমার চুপিসারে দেখে যাওয়াতে। তুমি কী ভেবেছিলে মেয়েদের চাহনি শুধু সম্মুখেই?
কলেজে যেতাম যখন পেছনে রিক্সায় তোমায় খুঁজে পেতাম, আমার বুড়ো বাবাকে যখন কাকুতি -মিনতি করে বলতে এলে 'চাচা, আমি আপনার ছেলে হতে চাই।' আমার চেয়ে সৌভাগ্যবান প্রেমিকা আর কে হতে পারে?
তুমি কেবল শিক্ষক নও, তুমি প্রেমিক। আমি হাজার বছর অপেক্ষায় থাকতেও রাজি ছিলাম।
-আচ্ছা, ক্রমযোজিত গণসংখ্যায় সমস্যা আছে?
--একদম নেই। কিন্তু, তোমার চেহারা বেগতিক লালা হয়ে যাচ্ছে কেন?
-ভালোবাসায়।
চট্টগ্রাম
০৪/১২/১৯
Friday, January 3, 2020
রক্তপিপাসু প্রিয়
গোলাপি জামদানী পরেছো আজ
কপালের টিপটাও ঠিকঠাক
অদ্ভুত মায়াদেবীর মতো লাগছে তোমায়
আমি হাত বাড়াচ্ছিনা; তুমি মায়া মায়া চোখে তাকিয়ে প্রার্থনায়;
প্রিয় তাকিয়ে তাকিয়ে ভালোবাসায় মাখিয়েছে
কাছে টানছেনা!
তুমি অভিমানী হয়ে; চুপটি ওভাবেই দাড়িয়ে
আমি বারংবার হারছি তবু হার মানছিনা
তোমার চক্ষু রক্তলাল আমি নির্ভীক তোমায় তাকিয়ে
প্রিয় তোমার কিছু বলছেনা!
জানো গোলাপিতে আমার কোন মোহ নেই
আমার ভালোবাসা সব নীলে
তুমি আমার প্রেমিকা নও, ভালোলাগা কিনা জানিনা
আমি তোমায় হাজারবার চাই
আবার একদমই চাইনা
তবু কীসে আমাদের এতো মিলে?
আমি জানিনা কীভাবে হাসো তুমি
কত আবেগী কান্না তোমার জানিনা তাও
জানতে চাইনি কীসে সুখি তুমি
তোমার প্রেম আমার আজো অজানা
তবু জানি কোনদিন ছুটবো দু'জনে, ঘুরবো ভীষণ,
স্বপ্নমেঘে ভাসাবো নাও
তুমি প্রেমরিক্ত প্রেমিকা নাকি প্রেমিকের খুনি
রক্তপিপাসু নাকি রমণী গুণী
আমি বুঝিনা; আমি ভাবিনা
প্রিয়, চুপিসারে আমার কানের পাশেতে ঝনঝনাঝন চুড়ি বাজিয়ে এসে একদিন বলো, 'শোণ, চোখ বন্ধ করে এক থেকে তিন গুনো'
তোমার টিপে লাল রক্ত; তুমি বহুরূপী মায়াবিনী
আমি পরাজিত ওই রুপে
গুনবো এক-দুউউই--তিই......
তোমার নূপুরধ্বনি! আহা প্রেম!
আমি অবাক তাকিয়ে ভাববো প্রেমিকা এমনও হয়!
সে কি সত্যিই আমার!
দিশেহারা রুপে মঙ্গলময়
নাকি জগতের কেউই কারো নয়!
তুমি বলবে, 'ওহে ভাবুক ভেবোনা আর, ছুঁয়ে দেখো!'
আমি হাত বাড়াবো, হাত বাড়াবে তুমিও
কোথায় প্রিয় মায়াদেবী? কোথায় তুমি?
আমি অতলস্পর্শে হারাতে হারাতে চিৎকারে বলে যাবো
"ভালো থেকো প্রেম, ভালো থেকো"।।
কপালের টিপটাও ঠিকঠাক
অদ্ভুত মায়াদেবীর মতো লাগছে তোমায়
আমি হাত বাড়াচ্ছিনা; তুমি মায়া মায়া চোখে তাকিয়ে প্রার্থনায়;
প্রিয় তাকিয়ে তাকিয়ে ভালোবাসায় মাখিয়েছে
কাছে টানছেনা!
তুমি অভিমানী হয়ে; চুপটি ওভাবেই দাড়িয়ে
আমি বারংবার হারছি তবু হার মানছিনা
তোমার চক্ষু রক্তলাল আমি নির্ভীক তোমায় তাকিয়ে
প্রিয় তোমার কিছু বলছেনা!
জানো গোলাপিতে আমার কোন মোহ নেই
আমার ভালোবাসা সব নীলে
তুমি আমার প্রেমিকা নও, ভালোলাগা কিনা জানিনা
আমি তোমায় হাজারবার চাই
আবার একদমই চাইনা
তবু কীসে আমাদের এতো মিলে?
আমি জানিনা কীভাবে হাসো তুমি
কত আবেগী কান্না তোমার জানিনা তাও
জানতে চাইনি কীসে সুখি তুমি
তোমার প্রেম আমার আজো অজানা
তবু জানি কোনদিন ছুটবো দু'জনে, ঘুরবো ভীষণ,
স্বপ্নমেঘে ভাসাবো নাও
তুমি প্রেমরিক্ত প্রেমিকা নাকি প্রেমিকের খুনি
রক্তপিপাসু নাকি রমণী গুণী
আমি বুঝিনা; আমি ভাবিনা
প্রিয়, চুপিসারে আমার কানের পাশেতে ঝনঝনাঝন চুড়ি বাজিয়ে এসে একদিন বলো, 'শোণ, চোখ বন্ধ করে এক থেকে তিন গুনো'
তোমার টিপে লাল রক্ত; তুমি বহুরূপী মায়াবিনী
আমি পরাজিত ওই রুপে
গুনবো এক-দুউউই--তিই......
তোমার নূপুরধ্বনি! আহা প্রেম!
আমি অবাক তাকিয়ে ভাববো প্রেমিকা এমনও হয়!
সে কি সত্যিই আমার!
দিশেহারা রুপে মঙ্গলময়
নাকি জগতের কেউই কারো নয়!
তুমি বলবে, 'ওহে ভাবুক ভেবোনা আর, ছুঁয়ে দেখো!'
আমি হাত বাড়াবো, হাত বাড়াবে তুমিও
কোথায় প্রিয় মায়াদেবী? কোথায় তুমি?
আমি অতলস্পর্শে হারাতে হারাতে চিৎকারে বলে যাবো
"ভালো থেকো প্রেম, ভালো থেকো"।।
Subscribe to:
Comments (Atom)
-
ভার্সিটি জীবন নিয়ে লেখার কিছু নেই আমার ! লেখালেখি ব্যপারটা আসলে অনেকটাই দিক নির্দেশিত হয়ে থাকে। ঠিক এ কারণেই কবিদ...
-
কোয়ারান্টাইনে ভাল্লাগেনা আরে গেলাম সেদিন চেনা রাস্তার ধারে সামনে পড়লো পরিচিত একলোক হাত বাড়ালো ক্যামনে ফিরাই মিলিয়ে নিলাম বুক ...
-
গোলাপি জামদানী পরেছো আজ কপালের টিপটাও ঠিকঠাক অদ্ভুত মায়াদেবীর মতো লাগছে তোমায় আমি হাত বাড়াচ্ছিনা; তুমি মায়া মায়া চোখে তাকিয়ে প্রার্থনায়;...