Saturday, April 13, 2019

'তুমি পিঁপড়ে, আমি বিশালাকার হাতি'



আমি তুখোড় যুক্তিবিদ। শত যুক্তিবিদ্যা আমার রক্তে মিশে আছে। তাই, সত্য-মিথ্যা যাই হোক অন্যের যুক্তি মানার কোন প্রশ্নই আসেনা!
-আমিই একমাত্র যুক্তিবিদ!
আমি গণিতে খুবই ভালো। ঠিক সে কারণে প্রথম সারিতে আমার জায়গা হয়। কিন্তু, একদম পেছনের সারির কেউ যদি আরো ভালো উপায়ে কোন গাণিতিক সমস্যার সমাধান করে দেয়, সে নিশ্চিত কারো কাছ থেকে দেখে লেখেছে!
-সৃজনশীল তো কেবল প্রথম সারিতে বসা ছাত্রছাত্রীরাই হয়!
সর্বদা ওয়ারফেজ-আর্টসেল এবং দেশি-বিদেশি গায়ক-গায়িকাদের গান কিংবা নতুন নতুন সকল সিনেমার খবর রাখলে অথবা চলমান কোন বিষয়ে লেখালেখি করলে আমি ‘আধুনিক প্রজন্ম’। কিন্তু, ধর্মের ইতিহাস, ধার্মিকতা বা ধর্মগ্রন্থ থেকে কিছু লিখে প্রকাশ করলে একেবারে সেকেলে, ধর্মান্ধ বা নব্য ফেসবুক ধর্মপ্রচারক! এখানে সব করা যাবে কেবল ধর্মের কথা লেখা যাবেনা!
- ফেসবুক তো ইহুদীর তৈরি শুধু তামাশা প্রকাশের ওয়েবসাইট। তাই খাঁটি মুসলিম হলে তা ব্যবহারের যোগ্যতা রাখেনা!
বিজেপি-কংগ্রেস কিংবা মমতার তৃণমূল নিয়ে মাতামাতি করলে কিংবা মিশর-ইরান-ফিলিস্তিন নিয়ে ঘন ঘন পোস্ট করলে তার দেশপ্রেম কম। আবার জনগণের ভুল ধরিয়ে দিলে কিংবা সরকারের সমালোচনা করলে দেশদ্রোহী!
-নাগরিকেরা প্লাস্টিক!
মেয়েদের যদি বলা হয় ‘পর্দা কর’। এটা নিতান্তই ভালো কথা। কিন্তু, সেটা তাঁর বিবেচ্য না। সে প্রত্যুত্তরে বলবে, ‘হে নির্বোধ পুরুষ, ধর্ষণ পর্দা বিবেচনায় হয়না’। আবার জানোয়ারেরা চোখে, মুখে, নাকে, কানে, হাতে কিংবা সারা শরীরেও ধর্ষণ করে। যেখানে বাদ যায়না অপ্রাপ্ত বয়স্ক থেকে পর্দানশীল নারীরাও। অথচ, নিজের পুরুষত্বের পর্দা ছিড়ে নিকৃষ্টতা শেষে জানুয়ারেরাও ঘটনার পেছনে ঠিকই পর্দার অযুহাত দেয়! তাহলে, ধর্ষণ, খুন কিংবা অপরাধের মূলে কী বা কারা?
-আমি নির্দ্বিধায় বলবো, ‘অযোগ্যতাসম্পন্ন বিচার ব্যবস্থা!’
( ফাঁসি দেয়া লাগবেনা। সরকারি সহযোগিতায় একদিন ফেসবুক লাইভ করে একটা ধর্ষকের বিশেষ অঙ্গ কেটে দেখালেই তো হয়। কিন্তু, কোন সরকার তা করেনা, করবেনা। কারণ, আমরা জানি এগুলো কারা ঘটায় কেবল সরকারেরা তাতে জ্ঞাত নয়! অতএব, সকল ক্ষেত্রে তিনমাসের জেল কেটে কেস খালাস!)
ধর্ম, ধার্মিকতা, ধর্মগ্রন্থ এ তিনটি বিষয় একমাত্রই বিশ্বাসীদের জন্য ।যেমন মুসলিমদের আল কোরআন, হিন্দুদের বেদ, বৌদ্ধদের ত্রিপিটকখ্রিষ্টানদের বাইবেল, ইহুদিদের তাওরাত ইত্যাদি । প্রত্যেকেরই তাঁর ধর্ম, ধার্মিকতা, ধর্মগ্রন্থ নিয়ে বলার অধিকার আছে। জানার বা জানানোর অধিকার আছে। কিন্তু, আমরা আধুনিক প্রজন্ম এসব নিয়ে ভাবতে গেলে, বলতে গেলে খুব কাছের বন্ধুটির চোখেই খারাপ হয়ে যাই। মূলতঃ অধার্মিকই ধর্মের কথায় আগ্রহ পায়না। অপর্দানশীল কিংবা জানোয়ার কেউই ধর্মে দীক্ষিত না।  ধর্মজ্ঞান সকল ধর্মের সকল মানুষে থাকলে অন্তত আর যাই হোক অন্যায়, অবিচার হতোনা।

‘তুমি পিঁপড়ে, আমি বিশালাকার হাতি’ চিন্তাধারণা ধর্মগ্রন্থ কেন উচ্চ মননশীল কোন ব্যক্তিত্বেও সমর্থন করেনা।

ছবিঃ ইন্টারনেট

No comments:

Post a Comment