Monday, August 31, 2015

প্রত্যাবর্তন

একটা মোমের পুতুল মনের ভেতরে তিলে তিলে বড় হচ্ছে।
অনেকদিন তার সাথে দেখা হয়না।আবার প্রতিনিয়ত সে আমার সাথেই বসবাস করছে।
শুধুই যে কাল্পনিক তা কিন্তু নয়,আমার বাস্তবতায় চরম সত্য সে!
আমার বদ্ধ দুয়ারে ফের তার কড়া নাড়ার বিষয়টা আমার অপ্রত্যাশিত ছিলোনা।
একজন প্রেমকই জানে ,আকাশে কালো মেঘ এলেই নীলিমা আকাশকে ছেড়ে দেয়না বরং আকাশের শরীরে নিজেকে লেপ্টে রাখে।
সে জন্য মেঘের শেষে আকাশ ঠিকই নীলে ভরা।
তার প্রতিটি স্পর্শ আমাকে মাঝে মাঝে শীতের বরফস্নাত জলধারার মতো শিহরিত করে।
তার একনাগাড়ে হেসে যাওয়া আর আমার একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকাটা কেমন যেন মিস হয়ে যাচ্ছে!

যতেষ্ট বড় হয়েছে সে।এখন তাকে আর সুইংগাম ফুলিয়ে দেখাতে হয়না।সাড়ে তিন বছরে তার জন্য কত গল্পইনা বানিয়েছি।
আজ গল্প শুনার সে বায়নাটা তার নেই! পাশে বসতে,গলা জড়িয়ে থাকতেও আজ বিষণ লজ্জা তার।
শুনেছি ধৈর্য্যের ফল নাকি "সুমিষ্ট"।কিন্তু,আমিতো নিজেকে তিক্ততায়ও ডুবাতে পারলামনা।
কতদূর অপেক্ষাকে আপনি "ধৈর্য্য" নামে সংজ্ঞায়িত করবেন?

একটা বিষয় কি জানেন? কাউকে মন থেকে ভালোবাসলে এবং দীর্ঘদিন পর তার উপস্থিতিতে আপনার সাহস,বুদ্ধি,চঞ্চলতার পারফর্ম্যাঞ্চ প্রায়ই শুন্যের কাছাকাছি তে চলে আসবে।
অথচ,এই আপনিই ভালোবাসার ভোর বেলাতে তাকে নিয়ে কল্পনার পৃথিবীর সম্পূর্ণটায় ঘুরে আসতেন।

যাহোক,আমার অপরিকল্পিত প্রেমগল্পে শুধু শুধু আপনাকে জড়িয়ে তিক্ততায় আবেশী করতে চাইনা
তার চেয়ে ভালো আমি একাই গাই--
"ছিলাম আমি ,আজো আছি .....প্রেমের কাছাকাছি,
হাতটা ছুঁয়ে বলো যদি ভালোবাসি... অনায়াসেই বাঁচি "

Saturday, August 29, 2015

'এক বাস্তবিক গুজবীয় গল্প এবং কিছু অভিজ্ঞতা'

মার্চ ২০০৯,কেবলই পড়ালেখার মাধ্যমিক লেভেলটা পেরিয়ে উচ্চমাধ্যমিকে ভর্তি হতে শহরে আসলাম। 
আমার গৃহশিক্ষক শ্রদ্ধেয় বেলাল স্যার। তিনি তখন 'ইউনিলিভার' কোম্পানীতে চাকরী করতেন। 
উনার সুবাদে আমিও মোহরার "উসমানীয়া পুলের গোড়া" এলাকার ডানপাশে সেসময়ের একমাত্র তিনতলা ভবনের 'চিলেকোটার" ভাড়া বাসায় উঠলাম। 
বাসস্থান পরিবর্তনের ফলে ওই এলাকার পরিবেশের সাথে একেবারেই অপরিচিত ছিলাম। 

এলাকাটি ভীষণ ভীড়েভরা যদিও তার প্রকৃতি বরাবর্‌ই গ্রামীন! 
এতো ভীড়ের কারণ, বাসাভাড়া সস্তা ছিল হেতু সে এলাকায় পোশাক শ্রমিকদের বসবাস বেশি আর পণ্যপ্রস্তুতকারী প্রতিষ্টানের জন্য বিখ্যাত এলাকা বলে। 

যাহোক,সেদিন রাত আনুমানিক ২টা ৪৫ মিনিট। স্যারের চাকরী সে সপ্তাহে "ডে সিফটে" (দিনে) তাই তিনি রাতে বাসাতেই ছিলেন। 
আমি ঘুমাচ্ছিলাম,স্যার আমাকে উচ্চস্বরে ডাকছিলেন। 
আমি চোখ মেলতেই যাদের বাসায় সাবলেট থাকতাম তাদের দেখতে পেলাম। 
স্যারসহ সবাই আমাকে বুঝালেন সারাদেশে এক আজব ঘটনা ঘটে যাচ্ছে! 

একটু স্পষ্ট করেই বললেন - "বাঁশ কাটলেই অবিরাম পানির সরবরাহ চলছে! 
যা আগে কখনো হয়নি এবং সারা দেশেই এর সাড়া পড়ে গেছে! " 

আগে কখনো দেখিনি বলে স্যারের সাথে আমিও বাসা থেকে বেরিয়ে বাঁশবাগানে ছুটলাম। 
আগ্রহী জনতার ঢল দেখে অতি সহজেই আমি আনন্দিত হয়ে গেলাম এমন দৃশ্যপটের জ্যন্ত সাক্ষী হতে পেরে। 
সকলের সাথে উপকারী পানীয় "বাঁশের পানি" খেলাম আর সং্‌গ্রহ করলাম! 
অনেকেই বলছিলেন এই পানি রোগ প্রতিরোধী! 
সকলেই আত্বীয় স্বজনকে মুঠফোনে জানাচ্ছিলো। আমি অবশ্য গভীররাতে সে প্রয়োজনবোধ করিনি। 
সকালে ঘুম থেকে উঠেই টিভিতে নিউজ দেখি "শীতকালে শুধু বাঁশ-ই নয় যেকোন গাছ থেকেই পানি পড়ে" !! 

এই ঘটনার কেন্দ্র হিসেবে ধরা যেতে পারে কোন এলাকার চোরকে,যে রাতে বাঁশ কাটতে গিয়ে এহেন পরিস্থিতির স্বীকার হতে পারে! 
তাই "বাঁশের পানি" গুজব ঘটনা বাদে কিছুই নয়! 

চারদিন পর বাড়িতে যাওয়ার পথেও দেখা গেলো, গ্রামে সহজ সরল মানুষজন তখনো সে পানি সং্‌গ্রহ করছে! 

বাসের জানালার ফটক দিয়ে তাকিয়ে দেখছিলাম,আর গুজবে নিজে "আজব" হয়ে যাওয়াকে মনে করে হাসা ব্যতিরেকে কিছু করার ছিলোনা। 

"গুজবের ধারণা শুধু এদেশেই নয় ,দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় বিদেশে অসংখ্য মানুষ মারা যায় রেডিও তে সম্প্রচারিত যুদ্ধের নাটককে বাস্তবিক যুদ্ধ ভেবে পলায়নের সময় " !!